৯০ এর দশকে যখন ইন্টারনেট বা তথ্য প্রযুক্তি এতটা প্রচলন ছিল না। সেই সময়ে কাগজে লিখে প্রিয়জনকে চিঠি বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লিখে ডাকযোগে পাঠাতে হতো। বিদেশ থেকে প্রবাসীরা লোক মারফত ছাড়া ডাকযোগে চিঠি পাঠালে সেটা হাতে পেতে ১৫ দিন থেকে ১ মাস সময় লাগতো। বর্তমানে উন্নত তথ্য প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট সেবা সহজ হওয়ায় সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়ে গেছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যবহার করে বিভিন্ন আপস ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, স্কাইপসহ অনেক অ্যাপস। সহজে মোবাইলে ইমো চালু করা এবং নম্বর অ্যাড করতে ঝামেলা কম হওয়ায় বেশির ভাগ মানুষ ইমো ব্যবহার করে। এক মোবাইল নম্বর দিয়ে একাধিক মোবাইলে ইমো চালু বা ব্যবহার করা যায়। যার কারণে কিছু কুচক্রী মহল সমাজে বা কমিউনিটির মধ্যে পরিচিত ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে থাকে।
প্রবাসে এই ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিং বেড়েই চলেছে। আর অনেক প্রবাসী এই ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিংয়ের ফাঁদে পড়ে ভুক্তভোগী হচ্ছেন। এসব প্রবাসীদের বিভিন্ন অফিস বা কোম্পানি থেকে লটারি বিজয়ী হয়েছে অথবা সমস্যার কথা বলে ফোন করে মোবাইলের মেসেজের পাসওয়ার্ড নম্বর চাওয়া হয়। আবার বিভিন্ন গ্রুপ নম্বর অ্যাড করে বারবার গ্রুপে ফোন করে বিরক্ত করা হয় বা গ্রুপে আপত্তিকর ছবি ভিডিও পাঠানো হয়। গ্রুপ না থাকতে চাইলেও বারবার গ্রুপে যুক্ত করা হয়।
অনেকেই যারা গ্রুপ থেকে কীভাবে সরে যেতে হয় জানেন না। এই রকম ইমো গ্রুপে হ্যাকিংকারী চক্রের সদস্যরা গ্রুপ বাদ দেওয়ার কথা বলে কৌশলে টার্গেট করা ব্যক্তির মোবাইলের মেসেজের নম্বরটা দিতে বলে। এভাবে ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিংয়ে ঝুঁকি বেশি। আবার অপরিচিত কাউকে মোবাইল দিলে অথবা দেখা যায় অনেকেই বেখালি বা কাজের ছাপে মোবাইলে এক স্থানে রেখে ব্যস্ত হয়ে যায় অন্য কাজে। আর এই সুযোগে কুচক্রী হ্যাকার মোবাইলের মেসেজের পিন পাসওয়ার্ড নিয়ে ইমো হ্যাক করে। এরপর হ্যাকাররা পরিচিত-অপরিচিত নম্বরে বিভিন্ন অজুহাত ও বিপদের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেয়।
ইমো হ্যাকারের শিকার কুয়েত প্রবাসী আব্দুস সাত্তারের মোবাইলে ফোন আসে হঠাৎ। পরিচিত মনে করে এই প্রবাসী নিজের মোবাইলের মেসেজে আসা পিন পাসওয়ার্ড বলে দেন। এরপর নিজ কাজে কর্মে ব্যস্ত হয়ে যান। এই ফাঁকে ইমো হ্যাক করে তার এক বন্ধু জসিম উদ্দিনকে ফোন করে দেশে জরুরি ৫ হাজার টাকা বিকাশ করতে বলেন ওই হ্যাকার। জসিম টাকা পাঠিয়ে দেয় সেই নম্বরে। হ্যাকার পরে আবার অন্য আরেক নম্বরে বিকাশে টাকা পাঠাতে বললে তখন জসিমের সন্দেহ হয়। সঙ্গে সঙ্গে সাত্তারকে বিষয়টা জানালে সে বলে, এই ব্যাপারে সে কিছুই জানে না।
সাত্তার তখন বন্ধুকে জানায়, কিছুক্ষণ আগে তাকে একটা নম্বর থেকে ফোন করে মোবাইলের মেসেজের নম্বর চাইলো। পরে বুঝতে পারেন তার ইমো হ্যাক হয়েছে। প্রতিদিন এভাবে প্রবাসীদের ফোন আসে অনেক সময় বলে লটারিতে বিজয়ী হয়েছে ইত্যাদি বলে ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকারের ফাঁদে পড়েন। ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিং থেকে বাঁচতে সর্তক হতে হবে। অপরিচিত কাউকে মোবাইল দেওয়া যাবে না। অপরিচিত কাউকে কোন অজুহাতে নিজের মোবাইলের মেসেজের পিন বা পাসওয়ার্ড জানতে চাইলে না দেওয়ার বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে।
Leave a Reply